প্রাথমিক শেষ পরীক্ষা (বৃত্তি পরীক্ষা) সমগ্র প্রশ্ন ও উত্তর – ২০১৯
পূর্ণমান- ১০০, বিষয় : বাংলা, সময় : ২ ঘন্টা ৩০ মিনিট
১। যে কোনো চারটি প্রশ্নের উত্তর দাও : ৪ × ৮ = ৩২
ক) “ঘাস তো আমার মা-ও খায় সে তোমার মতো এত বড়ো হয়নি।” – কোন রচনার অংশ? লেখক কে? কে কাকে এই কথাটি বলেছিল? কেন বা বলেছিল? বক্তা কী উত্তর পেল? তারপর কী সিদ্ধান্ত হল? ১+১+১+২+১+২=৮
উঃ- ‘নরহরি দাস’ রচনার অংশ।
* লেখক উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী।
* ছাগল ছানা ষাঁড়কে এই কথাটি বলেছিল।
* ছাগলছানা বড়ো ষাঁড়ের শিং দেখে জিজ্ঞাসা করেছিল, ‘হ্যাঁগা তুমি কি খাও?’ তার উত্তরে ষাঁড় বলেছিল ঘাস খাই। তাই ছাগলছানা একথা বলেছিল।
* বক্তা উত্তর পেল – তার মায়ের চেয়ে ঢের ভালো ঘাস অনেক বেশি করে খায়।
* তারপর সিদ্ধান্ত হয়েছিল ছাগলছানাকে ষাঁড় বনের ভিতর ঘাস খাওয়াতে নিয়ে যাবে। বনের ভিতরে চমৎকার ঘাস খেয়ে ছাগলছানার পেট খুব ভারী হল, চলতেও পারলো না। ষাঁড় চলে যেতেই ছাগলছানা একটি গর্তের ভিতরে গিয়ে ঢুকলো।
খ) “সিংহের মামা আমি নরহরি দাস” – উদ্ধৃত কথাগুলি কোন গল্পের অংশ? লেখক কে? নরহরি দাস আসলে কে? সে কাকে ভয় দেখাতে চেয়েছিল? শেষপর্যন্ত বাঘ ভয় পেয়ে পালিয়ে গেল কেন? ১+ ১ + ১ +১+৪=৮
উঃ- উদ্ধৃত কথাগুলি ‘নরহরি দাস’ গল্পের অংশ।
* লেখক উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী।
* নরহরি দাস আসলে ছাগলছানা।
* সে শিয়ালকে ভয় দেখাতে চেয়েছিল।
* ছাগলছানা দূর থেকে বাঘ এবং শিয়ালকে আসতে দেখে বলে ওঠে –
“দূর হতভাগা! তোকে দিলুম দশ বাঘের কড়ি
এক বাঘ নিয়ে এলি লেজে দিয়ে দড়ি!”
– একথা শুনে বাঘ খুব ভয় পেয়ে যায় এবং ভাবে নিশ্চয়ই শিয়াল তাকে চালাকি করে নরহরি দাসের কাছে খেতে দেওয়ার জন্য নিয়ে এসেছে। তাই বাঘ ভয় পেয়ে শেষ পর্যন্ত দৌড়ে পালিয়ে যায়।
গ) “তোমাকে দেখছি এবার লোহার বালা গড়িয়ে দিতে হবে।” – উদ্ধৃত অংশটি কোন গদ্যের অংশ? এর লেখক কে? কে কাকে এই কথা বলেছিল? কোন ঘটনার প্রেক্ষিতে এই কথা বলা হয়েছে? ১+১+২+৪=৮
উঃ- উদ্ধৃত অংশটি ‘ছেলেবেলার দিনগুলি’ গদ্যের অংশ।
* এর লেখিকা পূণ্যলতা চক্রবর্তী।
* কথাটি লেখিকার মা পূণ্যলতা চক্রবর্তীকে বলেছিল।
* লেখিকা একদিন তার দাদার সঙ্গে চোর পুলিশ খেলছিল। দাদা হয়েছিল পুলিশ এবং লেখিকা হয়েছিল চোর। লেখিকার হাতে একটি সাপমুখো বালা ছিল, তার একটা মুখ টেনে ফাঁক করে অন্য বালাটা তার ভিতর দিয়ে গলিয়ে দিব্যি হাতকড়ি বানিয়ে লেখিকার দাদা লেখিকাকে ধরে নিয়ে চলল। ঐ অবস্থায় লেখিকা এক ঝটকায় হাত ছাড়াতে গিয়ে বালা ভেঙে দু-তিন টুকরো হয়ে ছাতে ছড়িয়ে পড়েছিল। টুকরোগুলো কুড়িয়ে মায়ের কাছে নিয়ে গেলে মা হেসে এই কথাগুলো বলেছিলেন।
ঘ) লুশাই পাহাড়ের বিস্তার কতখানি জায়গা নিয়ে? কেন পাহাড়কে ভয়ঙ্কর জায়গা বলা হয়েছে? কারা সেই পাহাড়ে গিয়েছিল? রাতে কোথায় তাঁবু খাটানো হয়েছিল? ঐ রাতে বুনো হাতীদের কীভাবে তাড়ানো হয়েছিল? ১+২+ ১ +১+৩= ৮
উঃ- লুশাই পাহাড়ের বিস্তার সাড়ে- ছশো সাতশো বর্গমাইল জায়গা নিয়ে।
* লুশাই পাহাড়কে ভয়ংকর বলা হয়েছে। কারণ, সে পাহাড়ে মানুষের নাম গন্ধ নেই। আছে শুধু জানোয়ারের কিলিবিলি। সন্ধ্যার পর পা ফেলতে গেলে মনে হয় এই বুঝি বাঘ মাড়ালাম। বেলা নটা-দশটার আগে আর সূর্য দেখা যায় না।
* লেখক প্রমদারঞ্জন রায় সহ প্রায় ষাট জন লোক, জিনিসপত্র, খোরাক ও দুটো হাতি সেই পাহাড়ে গিয়েছিল।
* রাতে পাকোয়া নদীর ওপারে তাবু খাটানো হয়েছিল।
* ঐ রাতে বুনো হাতিদের লুশাইরা শুকনো বাঁশের মশাল তৈরি করে, লম্বা লম্বা কাঁচা বাঁশের আগায় বেঁধে দিল। তারপর মশালগুলি ঘুরিয়ে বিকট চিৎকার করতে করতে হাতিগুলিকে ভয় দেখিয়ে তাড়িয়ে ছিল।
ঙ) “ভাত হয়ে গেলে মাটির কড়াইতে মাছের ঝোল রাঁধে।” – উদ্ধৃত অংশটি কোন গল্প থেকে নেওয়া হয়েছে? রাঁধার কাজটি কে করেছিল? কী চালের ভাত হল? কোথা থেকে মাছ কেনা হয়েছিল? কোথায় রান্না করা হয়েছিল? কীসের থালায় তারা ভাত খেয়েছিল ? খাওয়ার পর কী কী জিনিস ধুয়ে তারা কোথায় রেখেছিল? ১+১+১+১+১+১+২=৮
উঃ- উদ্ধৃত অংশটি ‘আমার মা-র বাপের বাড়ি’ গল্প থেকে নেওয়া হয়েছে।
* রাঁধার কাজটি এক মাঝি করেছিল।
* লাল লাল মোটা মোটা চালের ভাত হল।
* পথে আসতে আসতে জেলেডিঙা থেকে মাছ কেনা হয়েছিল।
* নৌকোর পিছন দিকের পাটাতন তুলে নিচে রাখা মাটির উনুনে কাঠ জ্বেলে রান্না করা হয়েছিল।
* মাটির থালায় তারা ভাত খেয়েছিল।
* খাওয়ার পর তারা থালা, বাটি, হাঁড়ি, কড়াই ধুয়ে পাটাতনের নিচে তুলে রেখেছিল।
২। যে কোনো চারটি প্রশ্নের উত্তর দাও : ৪ × ৪ = ১৬
ক) “মাটির কাছে সহিষ্ণুতা / পেলাম আমি শিক্ষা” – কোন কবিতার অংশ ? কার লেখা ? কবি কী বলতে চেয়েছেন? ১ + ১ + ২ = ৪
উঃ- উদ্ধৃত অংশটি ‘সবার আমি ছাত্র’ কবিতার অংশ।
* কবি সুনির্মল বসু’র লেখা।
* এখানে কবি বলতে চেয়েছেন – মাটির উপর যত অত্যাচার করা হোক না কেন? মাটি যেমন চুপচাপ সহ্য করে, সেরকম বাঁচতে গেলে আমাদের সহ্য ক্ষমতা থাকা চাই।
খ) “আল্লা মেঘ দে পানি দে ছায়া দে রে তুই।” – কোন কবিতার অংশ? পানির অভাবে কোন্ পরিস্থিতি তৈরী হয়েছিল? ১+৩=৪
উঃ- উদ্ধৃত অংশটি কবি জসীমউদ্দীন-এর লেখা ‘বর্ষার প্রার্থনা’ কবিতার অংশ।
* পানির অভাবে আসমান হয়েছিল টুডা টুডা ( ভাঙা ) এবং জমিন হয়েছিল ফাডা ( ফাটা )। খাল বিল শুকিয়ে গিয়েছিল, পাখি কেঁদে কেঁদে মরছিল, কপোত-কপোতী খোপে বসে সর্বদা কাঁদছিল। শুকনো ফুলের কড়ি ঝরে পড়ছিল।
গ) “সত্যি চাওয়া” – কবিতাটি কার লেখা? এখানে ‘তোরা’ বলতে কাদের বোঝানো হয়েছে? তারা সত্যি চাইলে কী কী হতে পারে বলে কবি মনে করেন? ১+১+২=৪
উঃ- উদ্ধৃত কবিতাটি নরেশ গুহু’র লেখা।
* এখানে ‘তোরা’ বলতে কবি প্রকৃতি প্রেমী মানুষদের কথা বলেছেন।
* প্রকৃতি প্রেমী মানুষরা সত্যি চাইলে ঘাস সবুজ হবে, জল মিষ্টি হবে, ফলের স্বাদ হবে এবং বাতাস গানে ভরে যাবে।
ঘ) “চৌপর দিনভোর দ্যায় দূর পাল্লা” – কবির নাম কী? কে দূর পাল্লা দেয়? কবিতায় ‘চৌপর’ ও ‘পাল্লা’ শব্দের অর্থ কী? ১ + ১ + ২ = ৪
উঃ- উদ্ধৃত অংশটির কবির নাম সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত।
* তিনজন মাল্লা অর্থাৎ মাঝি নৌকো নিয়ে নদীপথে দূর পাল্লা ( পাড়ি ) দেয়।
* ‘চৌপর’ শব্দের অর্থ – চার প্রহর বা সমস্ত দিন বা সমস্তরাত।
* ‘পাল্লা’ শব্দের অর্থ – পাড়ি।
ঙ) “এক লাইনে সবাই বসে করল খাওয়া শুরু” – কবি কে? এক লাইনে বসে কী কী খাওয়া হল? খাওয়া শেষে কী হল? ১ + ২ + ১ = ৪
উঃ- উদ্ধৃত অংশটির কবি গোলাম মোস্তাফা।
* এক লাইনে বসে ধুলো-বালির-কোর্মা-পোলাও এবং কাদার পিঠে খাওয়া হল।
* খাবার শেষে কবি যখন হাজির হয়েছিল, তখন দুষ্টুরা সবাই খিলখিলিয়ে হেসে পালিয়ে গিয়েছিল এবং বলেছিল ‘বেজায় মিঠে’।
৩। কবি ও কবিতার নাম লিখে শূন্যস্থান পূরণ করো : ১ + ১ + ৬ = ৮
বহু __ ধরে বহু __ দূরে,
বহু __ করি বহু __ ঘুরে,
দেখিতে গিয়েছি __,
দেখিতে গিয়েছি __।
উঃ- কবিতার নাম ‘বহু দিন ধরে’ এবং কবির নাম রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।
বহু দিন ধরে বহু ক্রোশ দূরে,
বহু ব্যয় করি বহু দেশ ঘুরে,
দেখিতে গিয়েছি পর্বতমালা,
দেখিতে গিয়েছি সিন্ধু।
৪। ক) অর্থ লেখো ( যে কোনো ৬টি ) ৬ × ১ = ৬
আকাঙ্ক্ষা, মুলুক, মৌন, হরিদ্রা, নিশানা, জহরত, খোরাক, মরাল।
উঃ- আকাঙ্ক্ষা– উচ্চ আশা বা মনের বাসনা
মুলুক– দেশ, নিজের এলাকা
মৌন– নীরব, চুপচাপ
হরিদ্রা– হলুদ বর্ণ
নিশানা– তাক করা, লক্ষ্য করা
জহরত– মূল্যবান পাথর
খোরাক– ভরণ পোষণ অর্থাৎ খাওয়া-দাওয়া সহ দায় দায়িত্ব
মরাল– রাজ হাঁস
খ) বাক্য রচনা করো ( যে কোনো ৩টি ) : ৩ × ২ = ৬
সোঁদা গন্ধ, নেমন্তন্ন, আগুয়ান, আয়াস, গৌরব।
উঃ- সোঁদা গন্ধ – বর্ষাকালে ভিজে মাটিতে সোঁদা গন্ধ বেরোয়।
নেমন্তন্ন – বিয়ে বাড়িতে আমারও নেমন্তন্ন আছে।
আগুয়ান ( অগ্রসর ) – জোয়ানের মত আগুয়ান হওয়া দরকার।
আয়াস – বসে বসে আয়াস করলে শরীরে রোগে ধরে।
গৌরব– ১৫ আগস্ট আমাদের গৌরবের দিন।
গ) বর্ণ বিশ্লেষণ করো ( যে কোনো ৩টি ) : ৩ × ২ = ৬
লাজুক, মোমবাতি, দেশান্তর, নিমন্ত্রণ, নিঃশ্বাস।
উঃ- লাজুক–ল্ +আ+ জ্+ উ+ ক্+ অ।
মোমবাতি–ম্+ ও +ম্+অ+ব্+ আ+ ত্+ ই।
দেশান্তর–দ্ +এ+ শ্+ আ+ ন্+ ত্+অ +র্ +অ।
নিমন্ত্রণ–ন্ + ই+ ম্+অ + ন্ + ত্ + র্+ অ +ণ + অ।
নিঃশ্বাস–ন্+ ই+ : + শ্ +ব্ +আ +স্ + অ।
ঘ) বিপরীত শব্দ লেখো ( যে কোনো ৬টি ) : ৬ × ১ = ৬
উল্টো, দুরন্ত, আধাআধি, সূর্যাস্ত, বিভেদ, দুর্বল, অন্ধকার।
উঃ- উল্টো – সোজা
দুরন্ত – শান্ত
আধাআধি -সম্পূর্ণ , গোটা
সূর্যাস্ত – সূর্যোদয়
বিভেদ– অভেদ, একত্রিত
দুর্বল–সবল
অন্ধকার – আলো
৫। ক) এলামেলো বর্ণগুলি সাজিয়ে শব্দ গঠন করো ( যে কোনো ৪টি ) : ৪ × ১ = ৪
দা বে য় কা, শ টে ন ভি লি, ক্তি ভো ঙ প জ ন, সা ৎ উ হ, ল হি লা মো ত, যো তা তি প্ৰ গি।
উঃ- দা বে য় কা– বেকায়দা
শ টে ন ভি লি – টেলিভিশন
ক্তি ভো ঙ প জ ন– ভোজন পঙক্তি
সা ৎ উ হ– উৎসাহ
ল হি লা মো ত – মোহিতলাল
যো তা তি প্ৰ গি– প্রতিযোগিতা
খ) লিঙ্গ পরিবর্তন করো ( যে কোনো ৪টি ) : ৪ × ১ = ৪
বৃদ্ধ, চাকর, মরাল, সাহেব, গিন্নী, জ্যেঠা।
উঃ- বৃদ্ধ – বৃদ্ধা
চাকর–চাকরানী, ঝি
মরাল – মরালী
সাহেব – বিবি, মেম
গিন্নী – কর্তা
জ্যেঠা – জেঠিমা
গ) এক কথায় প্রকাশ করো ( যে কোনো ৪টি ) : ৪ × ১ = ৪
যে বিদেশে থাকে, বুদ্ধি আছে যার, ভিক্ষার অভাব, দেখা যায় না যা, ময়ূরের ডাক, জল ও স্থলে থাকে যে।
উঃ- যে বিদেশে থাকে – প্রবাসী
বুদ্ধি আছে যার- বুদ্ধিমান
ভিক্ষার অভাব – দুর্ভিক্ষ
দেখা যায় না যা – অদৃশ্য
ময়ূরের ডাক – কেকা
জল ও স্থলে থাকে যে–উভচর
৬। যে কোন একটি বিষয়ে অনুচ্ছেদ রচনা করো : ১ × ৮ = ৮
ক) একজন মনীষীর জীবনী। খ) বাঙালির প্রিয় উৎসব। গ) শীতের উৎসব।
_____________